Severity: 8192
Message: Return type of CI_Session_files_driver::open($save_path, $name) should either be compatible with SessionHandlerInterface::open(string $path, string $name): bool, or the #[\ReturnTypeWillChange] attribute should be used to temporarily suppress the notice
Filename: drivers/Session_files_driver.php
Line Number: 132
Backtrace:
File: /home/manindra/public_html/application/controllers/Mainc.php
Line: 25
Function: library
File: /home/manindra/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once
Severity: 8192
Message: Return type of CI_Session_files_driver::close() should either be compatible with SessionHandlerInterface::close(): bool, or the #[\ReturnTypeWillChange] attribute should be used to temporarily suppress the notice
Filename: drivers/Session_files_driver.php
Line Number: 294
Backtrace:
File: /home/manindra/public_html/application/controllers/Mainc.php
Line: 25
Function: library
File: /home/manindra/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once
Severity: 8192
Message: Return type of CI_Session_files_driver::read($session_id) should either be compatible with SessionHandlerInterface::read(string $id): string|false, or the #[\ReturnTypeWillChange] attribute should be used to temporarily suppress the notice
Filename: drivers/Session_files_driver.php
Line Number: 168
Backtrace:
File: /home/manindra/public_html/application/controllers/Mainc.php
Line: 25
Function: library
File: /home/manindra/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once
Severity: 8192
Message: Return type of CI_Session_files_driver::write($session_id, $session_data) should either be compatible with SessionHandlerInterface::write(string $id, string $data): bool, or the #[\ReturnTypeWillChange] attribute should be used to temporarily suppress the notice
Filename: drivers/Session_files_driver.php
Line Number: 237
Backtrace:
File: /home/manindra/public_html/application/controllers/Mainc.php
Line: 25
Function: library
File: /home/manindra/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once
Severity: 8192
Message: Return type of CI_Session_files_driver::destroy($session_id) should either be compatible with SessionHandlerInterface::destroy(string $id): bool, or the #[\ReturnTypeWillChange] attribute should be used to temporarily suppress the notice
Filename: drivers/Session_files_driver.php
Line Number: 317
Backtrace:
File: /home/manindra/public_html/application/controllers/Mainc.php
Line: 25
Function: library
File: /home/manindra/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once
Severity: 8192
Message: Return type of CI_Session_files_driver::gc($maxlifetime) should either be compatible with SessionHandlerInterface::gc(int $max_lifetime): int|false, or the #[\ReturnTypeWillChange] attribute should be used to temporarily suppress the notice
Filename: drivers/Session_files_driver.php
Line Number: 358
Backtrace:
File: /home/manindra/public_html/application/controllers/Mainc.php
Line: 25
Function: library
File: /home/manindra/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once
Severity: Warning
Message: ini_set(): Session ini settings cannot be changed after headers have already been sent
Filename: Session/Session.php
Line Number: 282
Backtrace:
File: /home/manindra/public_html/application/controllers/Mainc.php
Line: 25
Function: library
File: /home/manindra/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once
Severity: Warning
Message: session_set_cookie_params(): Session cookie parameters cannot be changed after headers have already been sent
Filename: Session/Session.php
Line Number: 294
Backtrace:
File: /home/manindra/public_html/application/controllers/Mainc.php
Line: 25
Function: library
File: /home/manindra/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once
Severity: Warning
Message: ini_set(): Session ini settings cannot be changed after headers have already been sent
Filename: Session/Session.php
Line Number: 304
Backtrace:
File: /home/manindra/public_html/application/controllers/Mainc.php
Line: 25
Function: library
File: /home/manindra/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once
Severity: Warning
Message: ini_set(): Session ini settings cannot be changed after headers have already been sent
Filename: Session/Session.php
Line Number: 314
Backtrace:
File: /home/manindra/public_html/application/controllers/Mainc.php
Line: 25
Function: library
File: /home/manindra/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once
Severity: Warning
Message: ini_set(): Session ini settings cannot be changed after headers have already been sent
Filename: Session/Session.php
Line Number: 315
Backtrace:
File: /home/manindra/public_html/application/controllers/Mainc.php
Line: 25
Function: library
File: /home/manindra/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once
Severity: Warning
Message: ini_set(): Session ini settings cannot be changed after headers have already been sent
Filename: Session/Session.php
Line Number: 316
Backtrace:
File: /home/manindra/public_html/application/controllers/Mainc.php
Line: 25
Function: library
File: /home/manindra/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once
Severity: Warning
Message: ini_set(): Session ini settings cannot be changed after headers have already been sent
Filename: Session/Session.php
Line Number: 317
Backtrace:
File: /home/manindra/public_html/application/controllers/Mainc.php
Line: 25
Function: library
File: /home/manindra/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once
Severity: Warning
Message: ini_set(): Session ini settings cannot be changed after headers have already been sent
Filename: Session/Session.php
Line Number: 375
Backtrace:
File: /home/manindra/public_html/application/controllers/Mainc.php
Line: 25
Function: library
File: /home/manindra/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once
Severity: Warning
Message: session_set_save_handler(): Session save handler cannot be changed after headers have already been sent
Filename: Session/Session.php
Line Number: 110
Backtrace:
File: /home/manindra/public_html/application/controllers/Mainc.php
Line: 25
Function: library
File: /home/manindra/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once
Severity: Warning
Message: session_start(): Session cannot be started after headers have already been sent
Filename: Session/Session.php
Line Number: 143
Backtrace:
File: /home/manindra/public_html/application/controllers/Mainc.php
Line: 25
Function: library
File: /home/manindra/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once
১৯২৩
অধ্যাপক মণীন্দ্র নাথ সমাজদার ১৯২৩ খ্রীস্টাব্দের ২৯ জানুয়ারি ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছায় সনাতন হিন্দু ধর্মের শ্রোত্রীয় রাঢ়ীয় ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম নিশিকান্ত সমাজদার এবং মাতার নাম হরিমতি। তাঁর পৈতৃক নিবাস বরিশাল জেলার গৌরনদী থানার ঐতিহ্যবাহি ফুলুশ্রী গ্রামে। ঐ গ্রাম এক সময় পণ্ডিত নগর বলে পরিচিত ছিল। কারণ শিক্ষা দীক্ষায় গ্রামটি প্রাচীনকাল থেকেই অগ্রসর ছিল। গ্রামটিতে বহু গুণীজন ও পণ্ডিতজন জন্মগ্রহণ করেছেন। বাংলাসাহিত্যে অমরগ্রন্থ মনসামঙ্গল কাব্যের রচয়িতা কবি বিজয় গুপ্ত জন্মগ্রহণ করেন এ গ্রামেই। সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে বরিশাল শহরের পরেই ছিল ফুলশ্রী গ্রামের স্থান। এই গৈলা ফুলশ্রী গ্রামের আরেক খ্যাতিমান সাহিত্যিক, লেখক, গবেষক, ভাষাবিদ ও পণ্ডিত ছিলেন অধ্যাপক মণীন্দ্রনাথ সমাজদার।
১৯৪১ - ১৯৭৩
অধ্যাপক মণীন্দ্র নাথ সমাজদার শিক্ষাজীবনে অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। যার প্রমাণ পাওয়া যায় পরীক্ষার ভালাে ফলাফলের জন্য স্বর্ণপদক লাভে। তিনি শিক্ষার দুটি বিষয়ে লেখাপড়া করেন। যা খুব কম লােকের পক্ষেই সম্ভব। তিনি প্রথমে সংস্কৃত সাহিত্য ও ব্যাকরণ এবং শাস্ত্রীয় বিষয়ে লেখাপড়া করেন। পরে সাধারণ বিষয়ে লেখাপড়া করেন। প্রথমে তিনি নিজ বাড়িতে বর্ণ পরিচয় শিক্ষা লাভ করেন। বর্ণ পরিচয় শিক্ষা লাভ করে গ্রামের দারােগা বাড়ির পাঠশালায় লেখাপড়া শুরু করেন। ঐ পাঠশালায় দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর দক্ষিণ ফুল্লশ্রী নরসিংহ দাশের বাড়ির উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন। সেখানে সপ্তমশ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়ার পর সাধারণ শিক্ষা ছেড়ে গৈলা কবীন্দ্র কলেজে সংস্কৃত পড়ার জন্য ভর্তি হন এবং এবিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন জ্যোতিশাস্ত্র ও আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রসহ।
অধ্যাপক মণীন্দ্রনাথ সমাজদার ব্যাকরণ তীর্থে ১ম বিভাগ লাভ করেন বেঙ্গল স্যানসক্রিট এসােসিয়েশন, কলিকাতা, ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে। এবং পর পর একই এসােসিয়েশন থেকে কাব্যতীর্থ (২য় বিভাগ), ১৯৪৪ খ্রি:, স্মৃতি তীর্থ (১ম বিভাগ, ১ম স্থান পুরস্কার), ১৯৪৮ খ্রি:, সাখ্যতীর্থ (২য় বিভাগ), ১৯৫২ খ্রি:, কাব্যবিনােদ (২য় বিভাগ), ১৯৪৪, পূর্ববঙ্গ সারস্বত সমাজ, ঢাকা এবং স্মৃতিরত্ন (১ম বিভাগ, ১ম স্থান সপুরস্কার), ১৯৪৮ খ্রি:, জ্যোতিষশাস্ত্রে (২য় বিভাগ), ১৯৪৯ খ্রি: ও আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে বাংলা আৰ্য্য সম্মিলনী সভা, কীবন্দ্র কলেজ, গৈলা, বরিশাল থেকে ডিগ্রী অর্জন করেন।
অধ্যাপক মণীন্দ্রনাথ সমাজদার সংস্কৃত সাহিত্য ও ব্যাকরণ, ধর্মীয়শাস্ত্রে, জ্যোতিশাস্ত্রে ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসা শাস্ত্রে অগাধপাণ্ডিত্য অর্জন করেন। এ সমস্ত ডিগ্রি বা উপাধি লাভের পর প্রায় ৩৫ বছর বয়সে তিনি পুনরায় সাধারণ শিক্ষায় মনােনিবেশ করেন। সাধারণ শিক্ষার ক্ষেত্রেও তিনি যথেষ্ট মেধা ও কৃতিত্বের পরিচয় দেন। তিনি যশাের বাের্ড থেকে ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে এস.এস.সি এবং একই বাের্ড থেকে ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে এইচ.এস.সি পাশের পর ঢাকা বিশ্বব্দ্যিালয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি হন। সেখান থেকে তিনি ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় বিভাগে বি.এ পাশ করেন এবং প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এম.এ ডিগ্রি প্রথম পর্ব পাশ করেন ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে এবং এম.এ সমাপ্তিপর্ব, ১ম বিভাগে ১ম স্থানসহ পাশ করেন ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে। এর জন্য তিনি স্বর্ণপদক পান।
১৯৪১ - ১৯৯৭
অধ্যাপক মণীন্দ্র নাথ সমাজদারের কর্মজীবনকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম জীবনে তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। পরবর্তিতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে গবেষক হিসেবে কাজ করেন। তিনি কর্মজীবন শুরু করেন শিক্ষকতার মাধ্যমে। তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপক, সহকারী অধ্যক্ষ, অধ্যক্ষ হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন। (ক) অধ্যাপক গৈলা কবীন্দ্র কলেজ, গৈলা, বরিশাল, ১৯৪১-১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ। (খ) সহকারী অধ্যক্ষ, কামিনী সুন্দরী চতুষ্পাঠী, ধর্মরক্ষিণী সভা, বরিশাল, ১৯৪৬-১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দ। (গ) অধ্যক্ষ, কামিনী সুন্দরী চতুষ্পাঠী, ধর্মরক্ষিণী সভা, বরিশাল, ১৯৫২-১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দ।
অধ্যাপক মণীন্দ্রনাথ সমাজদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের গবেষণা সহকারী (১৯৭৬-১৯৮৪), গবেষণা সহযােগী, পাণ্ডুলিপি উন্নয়ন প্রকল্প (১৯৮৪-১৯৮৭)। এছাড়াও প্রশ্নকারক এবং উত্তরপত্র পরীক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন (১৯৭৬-১৯৮৪)।
এখানে গবেষক হিসেবে তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং অতিপ্রয়ােজনীয় কাজ করেছেন তা হচ্ছে- প্রাচীন পাণ্ডুলিপি গ্রন্থের বিবরণ, বিবৃতি ও পরিচায়ন :
(১) গ্রন্থ বিবরণী (৮ম খণ্ড) : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব সংগ্রহের সংস্কৃত, বাংলা, মৈথিলী, হিন্দি প্রভৃতি ভাষার মােট দু'হাজার একশত চল্লিশ খানা গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি বিবৃত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পান্ডুলিপি শাখার সংরক্ষিত আছে অপ্রকাশিত অবস্থায়। (২) গ্রন্থবিবরণী (৭ম খণ্ড) : কিশােরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরী, দিনাজপুর নাজিমুদ্দিন মুসলিম হল লাইব্রেরী, যশাের পাবলিক লাইব্রেরী, বরিশাল ব্রজমােহন মহাবিদ্যালয় লাইব্রেরী, সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ, কুমিল্লা রসমালা গ্রন্থাগার এবং অধ্যাপক মােফাখখারুল ইসলাম সাহেবের ব্যক্তিগত, মােট একহাজার আঠারাে খানা গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি বৃিত হয়েছে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পান্ডুলিপি শাখায় সংরক্ষিত রয়েছে অপ্রকাশিত অবস্থায়। (৩) গ্রন্থপরিচায়ন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পান্ডুলিপি উন্নয়ন প্রকল্পের অধীন প্রায় সারে সাতশত।
অধ্যাপক মণীন্দ্রনাথ সমাজদার কর্মজীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে দক্ষতা ও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। যার জন্য তিনি সর্বক্ষেত্রে সবার প্রশংসা অর্জন করেছেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন একজন স্বনামধন্য আদর্শ শিক্ষক। ছাত্রদের কাছে তিনি ছিলেন অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র। সাহিত্য ও গবেষণার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ ও প্রাজ্ঞ গবেষক।
১৯৫২-১৯৭৬
অধ্যাপক মণীন্দ্র নাথ সমাজদারের বহুমুখী প্রতিভার ও কর্মকাণ্ডের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য তাঁর সাহিত্যকর্ম। সাহিত্য জগতে তিনি ছিলেন একজন অসাধারণ সাহিত্যিক। তিনি প্রায় শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেন এবং অসংখ্য প্রবন্ধ লেখেন। তাঁর লেখা বহু প্রবন্ধ দেশ বিদেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তাঁর গ্রন্থ ও প্রবন্ধের মধ্যে রয়েছে ধর্মীয়, ঐতিহাসিক, জীবনী বিষয়ক এবং বাংলা ব্যাকরণ ও সংস্কৃত ব্যাকরণ। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলাের মধ্যে রয়েছে মৌলিক গবেষণামূলক, সম্পাদনা, অনুবাদ গ্রন্থ।
অধ্যাপক মণীন্দ্রনাথ সমাজারের বেশকিছু গ্রন্থ প্রকাশিত আছে এবং তার অনেকগুলাে গ্রন্থ অপ্রকাশিত অবস্থায় আছে। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থগুলাে পাঠক সমাজে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বিশেষ করে বাংলা একাডেমী কর্তৃক প্রকাশিত সংস্কৃত প্রাকৃত অবহটঠ সাহিত্যের ইতিহাস, প্রাচীন ভারতীয় লিপিমালা ও বরিশাল থেকে প্রকাশিত বরিশাল ধরক্ষিণী সভা ও কামিনী সুন্দরী চতুষ্পঠির ইতিহাস, সংস্কৃত প্রবেশ, সংস্কৃত সাহিত্যম এবং অতি বৃহৎ বাল্মীকি রামায়ণ প্রভৃতি। তাঁর অপ্রকাশিত গ্রন্থগুলাের মধ্যে সংক্ষিপ্ত বাল্মীকি রামায়ণ (বৃহৎ) মণীন্দ্র জীবনালেখ্য, বাংলাদেশে সংস্কৃত চর্চা, নবযুগ বাংলা ব্যাকরণ, নাট্য সাহিত্যের ধারা, কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র প্রভৃতি। এসমস্ত গ্রন্থগুলাে প্রকাশিত হলে দেশবাসী অনেকটা উপকৃত হবেন।
১৯৮৬
ক) বাংলা একাডেমী ফেলাে, ঢাকা, নং ১৭১, ১৯৮৬ খ্রি. অধ্যাপক মণীন্দ্র নাথ সমাজদার শিক্ষা, গবেষণা ও সাহিত্য ক্ষেত্রে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমীর ফেলােশিপ লাভ করেন। ১৯৮৬ খ্রীস্টাব্দের ৪ জানুয়ারি তাঁকেসহ ১৭ জনকে বাংলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে ফেলােশিপ প্রদান করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কবি বেগম সুফিয়া কামাল।
১৯৪৭ - ১৯৭১
অধ্যাপক মণীন্দ্রনাথ সমাজদার স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। দেশ ও জাতির প্রয়ােজনে তিনি দেশপ্রেমিক স্বাধীনতাকামী নেতা-কর্মীদের সব সময় প্রেরণা ও সাহায্য সহযােগীতা করেছেন। ইংরেজ শাসনকালের শেষদিকে কিশাের মণীন্দ্রনাথ সমাজদার ব্রিটিশ বিরােধী সংগ্রামীদের বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযােগীতা করেছেন।
১৯৪৭ খ্রীস্টাব্দে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর আবার আন্দোলন সংগ্রাম চলে পাকিস্তানি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে। এসব আন্দোলন সংগ্রামেও তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫৪ খ্রীস্টাব্দের নির্বাচন, ১৯৬৯ খ্রস্টাব্দের ছাত্রগণ আন্দোলন এবং ১৯৭০ খ্রীস্টাব্দের সাধারণ নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এ নির্বাচনে মণীন্দ্রনাথ সমাজদার দক্ষিণবঙ্গের আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকেন।
১৯৭১ খ্রীস্টাব্দের মুক্তিযুদ্ধেও তিনি প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেন। ২৫ মার্চ পাকহানাদার বাহিনী যখন গণহত্যা শুরু করে তখন অধ্যাপক মণীন্দ্রনাথ সমাজদার ঢাকায় ছিলেন। যার জন্য তার ঢাকায় গণহত্যা ও অগ্নিসংযােগসহ পাকহানাদারদের বর্বর হত্যাকাণ্ডের নির্মমতা প্রত্যক্ষভাবে দেখার সুযােগ হয়েছিল। এ দৃশ্য দেখার পর তিনি ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ঢাকা থেকে যাওয়াও খুব কঠিন। তবুও তিনি জীবন-মরণ পণ করে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন সপরিবারে। প্রথম তিনি ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জের তালতলা গিয়ে এক বাড়িতে আশ্রয় নেন এবং সেখানে কয়েকদিন অবস্থান করেন। তারপর তিনি বাড়ির দিকে রওনা দেন এবং আধুনা শ্বশুরবাড়ি গিয়ে উঠেন। যাওয়ার সময় রাস্তায় বহু স্থানে পাকহানাদারদের হত্যাযজ্ঞ দেখতে পান। যা তাকে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য উত্সাহ যােগিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকে তিনি নিজ বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন বহু হিন্দু মুসলিম নারীকে। তিনি নিজে এলাকার মুক্তিযােদ্ধাদের সংগঠিত করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। নিজের তিন পুত্রকেও তিনি পরামর্শ ও অনুপ্রেরণা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে পাঠান। তাঁর তিন সন্তান রতন কুমার সমাজদার, মানিকলাল সমাজদার এবং হিরেন্দ্রনাথ সমাজদার হিরু পিতার পরামর্শ এবং অনুপ্রেরণায় মুক্তিযুদ্ধে যােগদান করেন। তারা ৯নং সেক্টরের বিভিন্ন স্থানে অত্যন্ত সাহসী ভূমিকা পালন করেন।
অধ্যাপক মণীন্দ্রনাথ সমাজদার মুক্তিযােদ্ধাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, তাদের অস্ত্রসস্ত্র রাখা বা এদিক সেদিক নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছেন। যার জন্যে পাকিস্তানিদের সহযােগীরা তার বাড়িতে লুটপাট করে সব নিয়ে। যায় এবং আগুন দিয়ে পুড়ে ছাড়-খাড় করে দেয়। পাকিস্তানি দালালরা তাঁকে খােজাখুজি করে। যার জন্যে তিনি এলাকায় থাকতে পারেননি। বাধ্য হয়ে এক পর্যায়ে ভারত চলে যান। সেখানে গিয়ে তিনি বিভিন্ন শিবিরে শিবিরে ঘুরে মুক্তিযােদ্ধাদের সংগঠিত করার কাজ করেছেন। এভাবেই তিনি নিজে এবং তাঁর তিনপুত্র মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ খ্রীস্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর দেশ হানাদার মুক্ত হলে মনীন্দ্রনাথ সমাজদার ১৯৭২ খ্রীস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে ফিরে আসেন।
১৯৪১ - ১৯৯৭
অধ্যাপক মণীন্দ্র নাথ সমাজদার সারাটি জীবনই সমাজ ও দেশের কল্যাণে নিজেকে নিয়ােজিত রেখেছেন। তিনি অনেকগুলি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা, উন্নয়ন ও সংস্কারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এক্ষেত্রে উল্লেখ করতে হয় বরিশালের ঐতিহ্যবাহী শ্ৰী শ্ৰী শংকর মঠের কথা। প্রতিষ্ঠানটি ১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন সতীশ চন্দ্র মুখােপাধ্যায়। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮২ সালে কতিপয় ব্যক্তি গ্রাস করার অপচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। পরে ১১ সদস্য বিশিষ্ট ট্রাস্টি বাের্ড গঠন করে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় বিপ্লবী দেবেন্দ্রনাথ ঘােষকে। প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য গঠনতন্ত্র তৈরি করা হয় বিশিষ্ট পণ্ডিত, সাহিত্যিক ও গর্ষেক মণীন্দ্রনাথ সমাজদারের নেতৃত্বে। উক্ত গঠনতন্ত্র বা নীতিমালার ভিত্তিতে শ্রী শ্রী শংকর মঠ পরিচালিত হচ্ছে এবং নবজীবন লাভ করছে। এছাড়াও তিনি বহু সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন। এসব প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের মধ্যে উল্লেখ্য- ক) জীবন সদস্য, বাংলা একাডেমী, ঢাকা, নং ৭১১ খ) জীবন সদস্য, বাংলাদেশ ভাষা সমিতি, ঢাকা, নং ২২ গ) আবাসিক সদস্য, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সােসাইটি, ঢাকা, নং ৩৮৪ ঘ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার্ড গ্রাজুয়েট, নং ২৯৪৫ ঙ) ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতি, ঢাকা চ) ঢাকা রামকৃষ্ণ মিশনে, ব্রহ্মচারীদের সংস্কৃত বিষয়ক শিক্ষা দান
১৯২৩ - ১৯৯৮
অধ্যাপক মণীন্দ্রনাথ সমাজদার গৌরনদী উপজেলার আধুনা গ্রামের সামবেদী শ্ৰোত্ৰিয় কাশ্যপ গােত্রীয় ব্রাহ্মণ শ্ৰীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর জ্যেষ্ঠ কন্যা বেলা রানীর (শ্রীমতি অমিতা) সাথে শুভ পরিনয় সূত্রে আবদ্ধ হন। তাঁদের তিনপুত্র ও দুই কন্যা সন্তান। পুত্রদের নাম শ্রী রতন কুমার সমাজদার, শ্রী মানিক লাল সমাজদার, শ্রী হীরেন্দ্রনাথ সমাজদার হিরু। দুই কন্যা- কৃষ্ণা ও মুক্তা। মণীন্দ্রনাথ সমাজদার তার সন্তানদের আদর্শ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তােলেন। তাঁরা সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সুনাম ও সুখ্যাতির সাথে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন।
১৯৯৮
বিশিষ্ট পণ্ডিত, দার্শনিক, সাহিত্যিক, ভাষাবিদ অধ্যাপক মণীন্দ্রনাথ সমাজদার ১৯৯৮ খ্রীস্টাব্দের ১৮ মার্চ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে সাথে সাথে নিয়ে ভর্তি করা হয় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে। সেখানে ডাক্তাররা প্রাণপন চেষ্টা চালান তাঁকে বাঁচিয়ে তােলার জন্য। কিন্তু তাঁদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ৭৫ বছর বয়সে ১৯৯৮ খ্রীস্টাব্দের ২০ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় বরিশাল সদর হাসাপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। অধ্যাপক মণীন্দ্রনাথ সমাজদার আজ আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তার কর্মময়জীবন সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের শিক্ষা ও বিদ্যা লাভের জন্য গভীরভাবে অনুপ্রেরণা যােগাচ্ছে।